অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : আগামী সপ্তাহে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে গুরুত্ব পাবে তাইওয়ান ইস্যু বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের পর এটিই শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। এর আগে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন এই দুই শীর্ষ নেতা।
বহুল প্রতীক্ষিত এই বৈঠক এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন পরাশক্তির এই দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা চরমে। ধারণা করা হচ্ছে, এশিয়ায় চীনের আধিপত্য বিস্তার এবং বেইজিংয়ের তাইওয়ানকে নিজেদের দাবি করার কারণে বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।
সম্প্রতি পাল্টাপাল্টি উত্তেজনামূলক বক্তব্যের কারণে গোটা বিশ্ব, বিশেষ করে আমেরিকার এশিয়ান মিত্র যেমন ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া সোমবার বালিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। আগামী ১৪ থেকে ১৬ নভেম্বর ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জি-২০ সম্মেলন। সেই সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
শি জিনপিং করোনা মহামারির কারণে দেশেই বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন এবং সম্প্রতি তিনি বিদেশ ভ্রমণ শুরু করেছেন। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর জো বাইডেন এক সপ্তাহের জন্য জলবায়ু সম্মেলন, আসিয়ান সম্মেলন ও জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে মিশর ও এশিয়া সফর শুরু করেছেন।
হোয়াইট হাউজের তরফে শীর্ষ নেতাদের বৈঠকটি নিশ্চিত করার পর বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, তিনি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তাইওয়ান ইস্যু নিয়ে কথা বলবেন। বাইডেন আরও বলেন, প্রত্যেকের ‘রেড লাইন’ কত দূর, তা শি জিনপিংকে জানিয়ে দেবেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষে যেন না জড়ায়, সেকারণে দুদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবেন। তাইওয়ান ইস্যুতে মার্কিন নীতির নড়চড় হবে না বলেও জানান মার্কিন প্রসিডেন্ট।
এর আগে বাইডেন প্রশাসন বারবার বলেছে চীনের আক্রমণ থেকে তাইওয়ানকে রক্ষায় সব ধরনের সহায়তা করবে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ভুল বোঝাবুঝি ও ভুল ধারণা এড়াতে চীনের সঙ্গে একসাথে কাজ করা উচিত।
গত মাসে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে, শি জিনপিং তাইওয়ানের বিষয়ে চীনের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। চীনের ‘ভূ-খণ্ডে’ হস্তক্ষেপ করলে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে তাইওয়ানের দিকে নজর দিচ্ছে। অপরদিকে, বেইজিংয়ের মূল ভিত্তি হলো এক চীন নীতি। তাইওয়ান নিজেদের স্বতন্ত্র দাবি করলেও চীন তাইওয়ানকে নিজেদের বলে মনে করে এবং এর আগে চীনের প্রেসিডেন্ট তাইওয়ানকে একত্র করার ঘোষণাও দেন।
তাইওয়ান ইস্যুতে পরাশক্তির এই দেশ দুটির মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা তো রয়েছেই। এ ছাড়া দক্ষিণ চীন সাগর, হংকং ও জিনজিয়াং প্রদেশের ইস্যু নিয়েও ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজমান। সূত্র: বিবিসি
Leave a Reply